স্বাধীনতা দিবস: পঞ্চম পর্ব

প্রসূন রঞ্জন দাসগুপ্ত
5 রেটিং
1473 পাঠক
রেটিং দিন
[মোট : 1 , গড়ে : 5]

পাঠকদের পছন্দ

প্রথম পর্বের লিংক :
https://www.saabdik.com/swadhinota-dibos-part1/
দ্বিতীয় পর্বের লিংক ;
https://www.saabdik.com/swadhinota-dibas-part2/
তৃতীয় পর্বের লিংক :
https://www.saabdik.com/swadhinota_dibos_3/
চতুর্থ পর্বের লিংক :
https://www.saabdik.com/swadhinota-dibos-part4/

তিন গোয়েন্দা  

আঠারো

25 শে ডিসেম্বর , 1999

বড়দিন উপলক্ষে সুভ্র বাড়ি এসেছিল, বাবা বাড়িতেই ছিল বউও তাড়াতাড়ি চলে এসেছে। সঙ্গীতার অফিসে আগের দিনই একটা সাকসেস পার্টি হয়েছে, “দ্বিতীয় মহেঞ্জোদরো “ নিউজ সিরিজটা খুব জনপ্রিয় হয়েছে। কয়েকটা খাতা শুভ্র বাড়ি নিয়ে গিয়েছিল দেখার জন্য, আসলে ওর বউ বলেই রেখেছিল নথিপত্র একটু ওকে দেখাতেই হবে পরের আর্টিকেল গুলোর জন্য। সেদিন সন্ধ্যায় মামনি বসার ঘরে বসে ছিল খাতা গুলো নিয়ে, অভ্র বাবুও আগ্রহের সাথে কয়েকটা খাতা টেনে দেখছিলেন। সুভ্র বলল “দেখেছো দুটো ব্যবসারই পুরনো খাতায় একটা নাম কমন আর সেটা হল সেখ ইব্রাহিম , কিন্তু লোকটা কে কিছুতেই ট্রেস করতে পারছি না, কেউই নাকি দেখেনি কিন্তু আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি ওই ব্যটাই নাটের গুরু”।              

সঙ্গীতা বলল “ হ্যাঁ সেটাই তো দেখছি, দেখ নতুন খাতা গুলোয় কিন্তু ওর সই নেই, সেগুলোয় কিন্তু ওই আনিসুরের সই, তবে কয়েকটা খাতায় কিন্তু DD বলে একজনের কাউন্টারসাইন আছে, সেটা আবার কে? কোন ট্রেস পেয়েছো? ‘

            অভ্রবাবু একটু অন্যমনস্ক ছিলেন, তারপর চমকে উঠে বললেন “ কি নাম বললি শুভ? সেখ ইব্রাহিম ? এই নাম টার সাথে আমি পরিচিত, কি অদ্ভুত সেদিন ওই খাতা টা দেখে একটা খটকা লেগেছিল বলছিলাম না, কিন্তু কি মনে পড়ছিল না এই বার মনে পড়ছে “।

শুভ্র ও সঙ্গীতা  দুজনেই অবাক হয়ে গেল যে বাবা কিভাবে সেখ ইব্রাহিম কে চিনলেন।

সুভ্র বলল “বাবা তুমি এই নাম টা কোথায় শুনেছ ? পুরনো কোন কেসে নাকি ? তবে মামনির ওই পুরনো খাতা টার সাথে আবার এর সম্পর্ক কি ? “

অভ্রবাবু বললেন “ আরে বলছি বলছি , তোদের তো বলেইছিলাম যে চাকরীর শুরুতে আমি যে বিধায়কের দেহরক্ষী ছিলাম সেই সুধাংশুশেখর দত্তগুপ্তের কাছে ওনার পুরনো জীবনের কথা শুনেছিলাম, আসলে ওনার একদিকের গাল টা পোড়া , তো আমরা বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার সময় অনেকক্ষন এক গাড়িতেই থাকতাম, তখন একদিন আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ওই আঘাত টা কিভাবে হল, তখন উনি বলেছিলেন যে স্বাধীনতার পরে একজন পাকিস্তানের চরের সাথে সংঘর্ষেই নাকি ওনার মুখের একপাশটা পুড়ে যায় ,সেই চরের নাম হল সেখ ইব্রাহিম। তার অবশ্য সুধাংশুশেখরের হাতে ওইখানেই মৃত্যু হয়। পরে একটা সেমিনারে উনি আবারও ওই স্মৃতিচারণ করেছিলেন, তখন আবার বলেছিলেন সেই সেখ ইব্রাহিম নাকি ওনারই বাল্য বন্ধু ছিল এবং এই সমস্ত ঘটনা টা নাকি ঘটেছিল গোবরডাঙ্গা তেই। আবার উনি যখন বিধায়ক তখন আমি দেখেছিলাম বেদিয়াপাড়ায় ওনার সার,ফিনাইল ইত্যাদির ব্যবসা ছিল। দেখ সেখ ইব্রাহিম নামটা যে কারো হতে পারে, কিন্তু এতগুলো ঘটনা কো-ইন্সিডেন্স হতে পারে কি ?”

শুভ্র বলল “সত্যিই ইন্টারেস্টিং , তোমার কথা শুনে তো মনে হচ্ছে এ সেই ইব্রাহিমই হবে, কারন গোবরডাঙ্গা র কারখানাটা অনেক পুরনো ও এতদিন আগের ঘটনা বলেই কিন্তু ওকে কেউ দেখেনি ,এখন প্রশ্ন হল তাহলে ওই কারখানাটা  ইব্রাহিমের কারখানা বলে পরিচিত হল কিকরে এবং খাতায় ওর সইই বা এলো কি করে?  আর হ্যাঁ বাবা তুমি যেন কি খটকার কোথা বলছিলে ?”

অভ্রবাবু বললেন “ হ্যাঁ তোর কথায় পয়েন্ট তো আছে। আর খটকার ব্যপারটা হল, বউমার ওই দাদুর খাতার ছবিটা তো তোদের দেখিয়েছি , নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছিলি যে ছবির নিচে ওনার চেহারার বিবরনে গালের পোড়া দাগের উল্লেখ আছে, এখন প্রশ্ন হল যদি  সুধাংশুশেখরের গাল স্বাধীনতার পর পোড়ে, তবে ওই খাতার টার বিবরণ কোথা থেকে এলো “।

 সঙ্গীতা বলল “ সব তীর তো দেখছি ওনার দিকেই যাচ্ছে, খাতা গুলো দেখুন ইব্রাহিমের সই কিন্তু পুরনো ও নতুন খাতায় দুরকম , এটাও আবার কি করে হয় ?”

শুভ্র দেখল সত্যিই ইব্রাহিমের সই সময়ের সাথে বদলেছে, এই পয়েন্ট টা কিন্তু ওর চোখে পরেনি, মনে মনে বউয়ের তারিফ করলো ও।

সঙ্গীতা অভ্রবাবুকে জিজ্ঞেস করলো “ আচ্ছা এই সুধাংশুশেখর কি এখনও বেঁচে আছেন না মারা গেছেন ? ওনার বউ ছেলে মেয়ে ছিল ?”

অভ্রবাবু বললেন “ সেটা আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না, তবে ওরকম একজন লোক মারা গেলে কাগজে নিশ্চয়ই দিত, শুভ একটু খোঁজ নিয়ে দেখিস তো, আর আমি যখন ওনার ডিউটি তে ছিলাম তখন দেখেছিলাম ওনার স্ত্রী মারা গেছিলেন, এক ছেলে ছিল দেবব্রত, পুরো বখে গেছিলো ছেলেটা, এখন কি করে কে জানে ? “

সঙ্গীতা চমকে উঠে বলল “ আচ্ছা এই দেবব্রত মানে দেবব্রত দত্তগুপ্তই খাতার DD নয়তো ?”

 শুভ্র বলল “ সর্বনাশ  তুমি তো বাড়ি বসেই কেস সল্ভ করে ফেললে দেখছি। দারাও কালই অফিস গিয়ে বাপ-ব্যাটার খোঁজ লাগাচ্ছি “।

1 লা জানুয়ারি 2000

আবার শুভ্রদের বসার ঘরে 3 জনে একসাথে বসেছে ,

শুভ্র বলল “ খোঁজ নিয়েছি, সুধাংশুশেখর বেঁচে আছেন, নিজের বেদিয়াপাড়ার বাড়িতে বানপ্রস্থ কাটাচ্ছেন, একাই থাকেন পরিচারকের সঙ্গে, আর তার ছেলেটি হয়েছে একটি রত্ন। সে এখন পার্টীর নেতা, বিরাট প্রতাপ, কতগুল বেআইনি ব্যবসার সাথে যে যুক্ত, তার কোন হিসেব নেই। বাবার সাথেও কোন সম্পর্ক রাখে না, ইনি খাতার DD হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল, আমি ওয়ারেন্টের জন্য অ্যাপ্লাই করেছি। তবে সুধাংশুশেখরকে ছোঁয়া জাবেনা, I.G সাহেব বলেছেন এরকম একজন অতি বৃদ্ধ লোক যিনি ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী তাঁকে প্রত্যক্ষ প্রমান না পাওয়া পর্যন্ত কোন ভাবে বিরক্ত করা চলবে না।

সঙ্গীতা জিজ্ঞেস করলো, “তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ ?”

অভ্রবাবু বললেন “ আমি আজ লাইব্রেরী তে গিয়ে শুনলাম যে বাংলাদেশে নাকি সরকারের তরফে একটা কমিটি গঠন করে কারা দেশ গঠনের পূর্বে পাকিস্তানের হয়ে বাংলাভাষী দের সঙ্গে বিস্বাসঘাতকতা করেছিল তাদের একটা তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। তুই একটা প্রপার চ্যানেলে আবেদন করে দেখ না ওই পাক চর সেখ ইব্রাহিম সম্বন্ধে কোন খবর পাস কিনা, কোন খবর না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশী, কিন্তু তাও একবার চেষ্টা করে দেখতে ক্ষতি কি ? “

শুভ্র বলল “ ঠিক আছে আবেদন করে দেখব , আর আপাতত ওই  DD র ব্যপারে যেখান থেকে পারি ইনফরমেশন জোগাড় করি “।

সঙ্গীতা বলল “ আমার কাছে একটা মজার খবর আছে, আমাদের কাগজের পক্ষ থেকে ঠিক হয়েছে, এবছর মিলেনিয়াম বছর হিসেবে সারাবছর ধরেই বিভিন্ন প্রাক্তন স্বাধীনতা সংগ্রামী যারা এখনও জীবিত আছেন বা বিশিষ্ট সমাজকর্মী দের ইন্টার্ভিউ নেওয়া ও প্রকাশ করা হবে, আমি সুধাংশুশেখরের নাম প্রস্তাব করেছি সেই মিটিঙে , এখন আমার ওপর দায়িত্ব পড়েছে সেই ইন্টার্ভিউ নেওয়ার , এবার বাবা আপনি আমায় ইন্ট্রডিউস করিয়ে দেবেন। “

শুভ্র চমকে উঠলো, বলল “করেছো কি ? এত দারুন ব্যপার , দেখ নতুন কিছু পাও কিনা, বাবা এটা পারবে তো ? “

অভ্রবাবু বললেন “ নিশ্চয়ই পারবো , দেখছি কবে হয় “ 

 24 শে জানুয়ারি, 2000  

সঙ্গীতা কাল সুধাংশুশেখরের এর সাথে প্রথম সিটিং করে এসেছে। বাড়ির সবাই খুব উদগ্রীব ছিল । সঙ্গীতা জানালো যে প্রথমদিন সেরকম কিছু হয়নি বলতে গেলে শুধু র‍্যাপো বিল্ডিং হয়েছে।

অভ্রবাবু বললেন “ ইব্রাহিমের প্রসঙ্গ তুলেছিলে ? কি হল ?”

সঙ্গীতা বলল “ হ্যাঁ তুলেছিলাম, উনি বেশ চমকে উঠেছিলেন , তারপর সামলে নিয়েছেন, তারপর বলে ফেলেছেন যে ইব্রাহিম ওনার ছোটবেলার বন্ধু ছিল “।

শুভ্র বলল “ ভালো তো দেখ কিছু পাও কিনা, আর যদি পারো একটা ওনার একটা লেখা এনো তো দেখি এক্সপার্টের কাছে পাঠাতে পারি কিনা। আর সামনে মাধ্যমিক- উচ্চ মাধ্যমিকের চাপ টা মিটলেই বাংলাদেশের ব্যপার টা দেখছি “।

15 ই মার্চ, 2000 ,

আগের দিন সঙ্গীতা সুধাংশুশেখরের থেকে আনা চিঠিটা শুভ্রকে দিয়েছিল, শুভ্র সাথে সাথেই সেটা এক্সপার্টের কাছে পাঠিয়েছিল, সেই রিপোর্ট পেয়ে ও বেশ চমকেই উঠলো।

শুভ্র বলল “ দেখ হাতের লেখাটার সাথে ওই খাতাগুলোর লেখা বা সইয়ের কোন মিল নেই তবে চিঠির লেখা ও নিচের সই আলাদা হাতের , মানে বুঝতে পারছ বুড়ো লেখাটা অন্য কাউকে দিয়ে লিখিয়েছে আর সই টা নিজের, এটা আগে আমার মনে ছিল না, বুড়োর সইটাও এক্সপার্ট কে দিয়ে চেক করাতে হবে “

সঙ্গীতা বলল “ সে তো হতেই পারে, ওনার বয়স হয়েছে চিঠিটা অন্য কাউকে দিয়ে লেখাতেই পারেন , সব কিছুতেই সন্দেহ করা ঠিক না। তুমি বল বাংলাদেশের ব্যপারটা কি করলে আর ওই DD র খোঁজ পাওয়া গেল ?”

  শুভ্র বলল “ হ্যাঁ তা তো হতেই পারে এবং সেটা হলেই ভালো। আর হ্যাঁ বাংলাদেশ সরকারের কাছে রিকোয়েস্ট পাঠানো হচ্ছে, কিন্তু বোঝোই তো, সরকারী ব্যপার 5-6 মাস ও লেগে যেতে পারে উত্তর আসতে। আর একটা কাজ ও করছি মামনির কাছে উনি কলেজের কথা বলেছিলেন আমি অলরেডি লোক লাগিয়েছি কলেজের আর্কাইভ থেকে ওনার ব্যপারে আরও কোন খবর পাওয়া যায় কিনা আর ওই DD নিশ্চিতভাবেই বুড়োর ছেলে এবং গুনধর মাল, এই সব কারবার তো আছেই, এরপর তোলাবাজি, ড্রাগ পাচারেও যুক্ত। হেড অফিসে কোথা বলেছি, ওর নামে খুব তাড়াতাড়িই ওয়ারেন্ট ইস্যু হবে “।

18 ই এপ্রিল , 2000

সেদিন সঙ্গীতা সবাই কে সুধাংশুশেখরের ইন্টার্ভিউ টা পড়ে শোনাচ্ছিল।

সব শুনে শুভ্র বলল “ বাঃ উনি তো বেশ গুছিয়েই লিখেছেন দেখছি, এত একে বারে রোমহর্ষক থ্রিলারের মতন শোনাচ্ছে, কিন্তু ফাঁক আছে হয়নি, আমি হলফ করে বলতে পারি সে রাতে ইব্রাহিমের মৃত্যু হয়নি, হতে পারে সে আধমরা হয়ে পড়েছিলো এবং পরে সে গোবরডাঙ্গার কারখানা টা টেকওভার করে ও সেখান থেকে ওই লাশ পাচারের ব্যবসা টা চালায় কিন্তু এখনই কিছু সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না “।

অভ্রবাবু জিজ্ঞেস করলেন “ এই লাস-কঙ্কাল পাচার চক্রের কি হল ?”

 শুভ্র বলল “ ওই কেস মোটামুটি মিটেছে, সব আড্ডাই পুলিশ ভেঙ্গে দিয়েছে, এবং ওদের বেশিরভাগই এখন জেলে, খালি ওদের পাণ্ডাটারই কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি , জানো একটা অদ্ভুত ও দুঃখজনক ব্যপার আজ জানতে পারলাম, ওই যে ডাক্তারি ছাত্র গুলো ধরা পড়েছিলো ও একজনের বাবা পারটির প্রভাব খাটিয়ে ওদের ছারিয়ে নিয়ে যায় সেই লোকটিই হল আমাদের DD ওরফে দেবব্রত ওরফে দেবা, ওর ছেলেই হল সে যার ছবি মামনি তুলেছিল, ছেলেটির নাম পার্থ, অর্থাৎ ছেলেটি হল সুধাংশুশেখরের নাতি, সে হচ্ছে হাড়োয়ার ওই কল্লোল ছেলেটির খুব ভালো বন্ধু, সেই কল্লোল জানিয়েছে ওই ঘটনার পর থেকে পার্থ ছেলেটি নাকি অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে , হাসপাতালের মনবিদ রা নাকি ওকে নিয়মিত দেখছেন, ওর বাড়ির সাথে বারবার যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু কেউই আসছে না “।

 অভ্রবাবু বললেন “ বলিস কি সবকিছু দেখছি ওই একটা পরিবার কে ঘিরেই হচ্ছে, আর সত্যিই কি অবস্থা কার পাপের শাস্তি কে পাচ্ছে “।

শুভ্র বলল “ আরেকটা দারুন খবর শোন, কলেজের আর্কাইভ থেকে সুধাংশুশেখরের খোঁজ পেয়েছি, এবং ওনার ব্যাচের আরও কয়েকজনের নাম পেয়েছি, তাদের মধ্যে একজন এখনও জীবিত, ওনারা শোভাবাজারের বনেদি বড়লোক, সর্বোপরি ওনার আবার ফটোগ্রাফির শখ ওনার সাথে দেখা করে কলেজ জীবনের তোলা ওনার কিছু বন্ধুর ছবি পেয়েছি, এই দেখ তার কপি, কিন্তু উনি যাকে সুধাংশুশেখর বলছেন, এইটা তার ছবি, অস্পষ্ট হলেও এখনকার সাথে অমিলই বেশী “

সবাই ছবিটার ওপর ঝুঁকে পড়লো ।

5 ই আগস্ট , 2000

সঙ্গীতার কাজ আগের মাসেই শেষ হয়ে গেছিলো, ও শুধু অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশ থেকে কি খবর আসে, সেখান থেকে যা উত্তর এলো ওদের মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় , ইব্রাহিম ছিল এক কুখ্যাত রাজাকার, মুক্তি যোদ্ধা দের যারা পশ্চিমবঙ্গ থেকে সাহায্য করতো তাদের অনেক কেই নাকি উনি অত্যাচার করে হত্যা করেছেন, তবে বাংলাদেশের মুক্তির পর ওনার খোঁজ কেউ পায় নি, ওঁরা ইব্রাহিমের যে ছবিটা পাঠিয়েছে সেটা দেখে তো সঙ্গীতা চমকে উঠলো, এ ছবি নিঃসন্দেহে সুধাংশুশেখরেরই ছোট বেলার ছবি, তাহলে উনিই কি ইব্রাহিম তাহলে সুধাংশুশেখর কে ? ও শুভ্রর আনা ওই ছবিটার সাথে এই ছবিটা ট্যালি কোরতে লাগলো এবং একটা সিদ্ধান্তে স্থির হল যে ইব্রাহিমের ছবির সাথেই বর্তমান সুধাংশুশেখরের মিল বেশী।

14 ই আগস্ট , 2000

সঙ্গীতা সুধাংশুশেখরের ওপর পাওয়া যাবতীয় কাগজ একটা ফাইলে পর পর লিপিবদ্ধ করে রেখেছিল, ওর ইচ্ছে কাল স্বাধীনতা দিবসের দিনই ওনাকে জেরা করার, এমন সময় শুভ্র ফোন করলো, ও বলল পার্থ ছেলেটি সুইসাইড অ্যাটেম্পট করেছে, কল্লোল ফারুক কে জানিয়েছে, ফারুক আসছে হাড়োয়া থেকে, কারন ওর ধারনা ছেলেকে দেখতে দেবা আসবেই, আর ওকে ট্রেস করার এটাই বেস্ট চান্স। শুভ্র ও হাসপাতালেই যাচ্ছে, এবং ও সঙ্গীতা কে সতর্ক করলো ও যেন একদমই একা সুধাংশুশেখরের বাড়ি না যায় কারন লোকটা সুবিধের নয়। এই বলে শুভ্র ফোন রেখে দিলো। সঙ্গীতার পার্থর জন্য খুব খারাপ লাগছিল। তবে ও ঠিক করলো কি আর করবে বুড়ো, কালই যাবো সুধাংশুশেখরের বাড়ি।

(চলবে)

চিত্র সৌজন্য : গুগল

আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন:

রেটিং ও কমেন্টস জন্য

নতুন প্রকাশিত

হোম
শ্রেণী
লিখুন
প্রোফাইল